শাশুড়ি-বউমার মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় অনেক বাড়িতেই ঝগড়া-অশান্তি লেগে থাকে। এ সমস্যার আঁচ করে অনেকেই বিয়ে করতেও ভয় পান।
আপনার স্বামী কিন্তু তার সন্তানও বটে, এই কথা ভুললে চলবে না। স্বামীকে নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামাটা বোকামি। আপনি শাশুড়ির থেকে সব দিকেই ভালো—বরের সামনে এমনটা দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি আপনার থেকে বয়সে বড়, অভিজ্ঞতাও বেশি। তাই তিনি সংসার সামলাতে আপনার থেকে বেশি দক্ষ হবেন, সেটিই স্বাভাবিক। এ কথা মাঝে মাঝে মেনে নিলে ক্ষতি নেই। শাশুড়ির প্রতি সম্মান শ্বশুরবাড়িতে আপনার জায়গা অনেক বেশি পোক্ত করবে।
আপনার কর্মক্ষেত্র নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ হচ্ছে? শাশুড়ি আগের প্রজন্মের মানুষ। তাই আপনার কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না-ও থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে মতবিরোধ হয় অনেক সময়। তার কথা অবজ্ঞা না করে; বরং কয়েক দিন আপনার কাজ, কর্মক্ষেত্র নিয়ে গল্প করুন শাশুড়ির সঙ্গে। বাইরের জগৎ সম্পর্কে শাশুড়ির ধারণা তৈরি করুন। দেখবেন সমস্যা অনেকটাই কমেছে।
বয়স হলে মানুষ অভিমানী হয়ে পড়েন। অল্পতেই তারা রেগে যান, আবার অল্পতেই রাগ কমে যায়। এমনটা আপনার বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেও হয় নিশ্চয়ই। শাশুড়ি কোনো কাজ করলে সমালোচনা না করে তার প্রশংসা করুন। এতে তিনি উৎসাহিত হবেন। কোনো ভুল হলেও গল্পের ছলে সেই ভুল শুধরে দিন। একে অপরের সঙ্গে কথাবার্তা বাড়লেই তো সম্পর্কের ভিত মজবুত হবে।
শাশুড়ির কোনো কথায় আঘাত পেলে সেই রাগ মনে পুষে রাখবেন না। কথায় কথায় শাশুড়িকে বুঝিয়ে দিন, আপনি তার কথায় কষ্ট পেয়েছেন। তবে ঝগড়া-অশান্তির ছলে নয়, শান্তভাবে আপনার সমস্যার কথা তাকে জানান। আপনার কোনো কথা তার খারাপ লাগলে তাকেও জানাতে বলুন। এভাবেই সম্পর্কের তিক্ততা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
শাশুড়ির পছন্দের বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। তার পছন্দের রান্না, অসুস্থতায় যত্ন করা, তার জন্মদিনটা একটু অন্য রকমভাবে পালন করা— আপনার এই ছোট ছোট প্রয়াসগুলোই তার মনে জায়গা করে নেবে। দীর্ঘ দিন সংসারের টানাপড়েনের জেরে অনেকেই খিটখিটে হয়ে যান, কিন্তু তার কথাও কেউ ভাবছে দেখলে তিনি খুশিই হবেন। সবাই মিলে গল্প করুন, সময় দিন শাশুড়িকে। ছেলেকেও বলুন মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে। মা-ছেলের সম্পর্কের মধ্যে না পড়াই ভালো।