গাইবান্ধার সদর উপজেলায় স্কুল শিক্ষক ও ইউপি সদস্য আব্দুর রউফকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করছে বিক্ষুব্ধ জনতাসহ শির্ক্ষাথীরা।
রবিবার গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের লক্ষীপুর বাজার এলাকায় এ মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা গাইবান্ধা-লক্ষীপুর সড়ক অবরোধ করে। এসময় সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। চরম ভোগান্তিতে পড়েন পথচারিরা। নিহত আব্দুর রউফ লক্ষীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর মাগুরাকুটি গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে।
এছাড়াও তিনি লক্ষ্মীপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষক, পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য পদে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তাব্য দেন, প্লাবন সরকার, আবুল কালাম আজাদ, ফাওজুর রহমান, ফুল মিয়া, রায়হানুল ইসলাম, মোকছেদুর রহমান প্রমুখ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে কাজ শেষে লক্ষীপুর বাজার থেকে রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তির সাথে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় শিক্ষক আব্দুর রউফ। বামনীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় রাস্তায় ব্রীজের কাজ চলায় মোটরসাইকেল থেকে নেমে হেঁটে পার হচ্চিলেন তিনি। এসময় অতর্কিতভাবে আরিফ মিয়া নামে এক যুবক তার উপর হামলা চালায়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্ত ব্যক্তি পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা শিক্ষককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে পাঠালে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরের দিন নিহত আব্দুর রউফ মিয়ার বোন মমতাজ বেগম বাদি হয়ে আরিফ মিয়া (৩৩) নাম উল্লেখ করে আরও ছয় থেকে সাত জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এ মামলায় আরিফ মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকা আরিফ মিয়া জামিনে বের হয়ে এসে এলাকায় প্রকাশ্যে বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। আরিফ মিয়া আওয়ামী যুবলীগের নেতা বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করেন। বাজারের বিভিন্ন দোকানে চাঁদা আদায় করেন। তার কমর্কান্ডে এলাকার লোকজন অতিষ্ট হলেও ভয়ে এতদিন কেউ মুখ খোলেনি বলে জানান বক্তারা। এদিকে, সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হলে লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এসে শিক্ষার্থীদের সঠিক বিচারের আশ্বাস দিলে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।