সহজ ভাষায় নৈশপ্রহরী হচ্ছে রাতের পাহারাদার। এর কাজ হচ্ছে, সম্পত্তি এবং সম্পদের পর্যবেক্ষণ করা, অপরাধ প্রতিরোধ করা, ঘটনা বা জরুরী পরিস্থিতিতে সাড়া দেয়া, অফিসের সম্পত্তির নিরপত্তা নিশ্চিত করা, অফিসে সকল প্রকার অনুমতিহীন প্রবেশ রোধ করা, অফিস চলাকালীন সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অফিস বন্ধের পর সকল দরজা-জানালাগুলো বন্ধ করা ও তালাবদ্ধ করা। আর এই নৈশপ্রহরীকে দিয়ে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে হিসাব রক্ষকের।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা সরকারি খাদ্য গুদামে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে সরেজমিনে সাংবাদিকের একটি টীম তথ্যানুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা মেলে এমন চিত্র। এ সময় দেখা যায়, গুদাম কর্মকর্তার কক্ষ ফাঁকা। চেয়ার-টেবিল পড়ে আছে নেই কর্মকর্তা। পাশেই হিসাব রক্ষকের কক্ষে চেয়ারে বসে লেখালেখির কাজ করছেন লুঙ্গী পরিহিত এক ব্যক্তি। দেখে মনে হলো হিসাব কর্মকর্তা। পরিচয়ে বলেন, নাম মহেন্দ্র রায়। শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। চাকুরি করেন নৈশপ্রহরীর। হিসাব রক্ষক নেই তাই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। দীর্ঘ ৭/৮ মাস ধরে এভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন।
কর্মকর্তা কোথায়? প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তিনি একটু আগে সুন্দরগঞ্জ চলে গেছেন। জানা যায়, এ গুদামের কর্মকর্তা শাহানাজ বেগম। দায়িত্বে আছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে। থাকেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে। অফিসে কাজ না থাকলে দুপুর ২টা বাজতেই বাসায় চলে যেতে অভ্যাস্ত। দোহাই একটাই অফিসের কাজে আসা।
ফোনে কথা হলে কর্মকর্তা শাহানাজ বেগম জানান, অফিসের কাজে সুন্দরগঞ্জে এসেছি। নৈশপ্রহরী মহেন্দ্র রায়ের বিষয়ে জানান, এখানে হিসাব রক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে। তাই তাকে (নৈশপ্রহরী) দিয়ে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। নৈশপ্রহরী হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না জানতে চাওয়া হলে ফোন কেটে দেন।
প্রিয় পাঠক, এখানে প্রশ্ন থেকে যায় নৈশপ্রহরী যদি দিনে হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে রাতে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করবে কে? কে দিবে এই সরকারি খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা? শুধু তাই নয়, কর্মকর্তা যদি অফিস ফাঁকি দিতে অভ্যাস্ত হন তবে সেবা গ্রহীতাদের কি অবস্থা? এর উত্তর রইল আপনাদের ওপর। তবে কথা একটাই, ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।