চাকুরি বিধি অনুযায়ী ৩ বছর পর পর বদলীর নিয়ম থাকলেও একই কর্মস্থলে প্রায় ৬ বছর ধরে চাকুরি করে আসছেন গাইবান্ধার মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নার্গিস জাহান। একই কর্মস্থলে দীর্ঘ সময় অবস্থানের সুযোগে শক্ত করেছেন নিজের ভিত। জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা না থাকায় নিজের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে করে আসছেন তেলেসমাতি কারবার। যেন দেখার কেউ নেই।
বাংলাদেশ সার্ভিস রুল অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের ৩ বছর পর পর বদলির কথা বলা হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, একই দপ্তরে ৩ বছরের অধিক চাকরিকাল বিপদে ফেলে দপ্তরের স্বল্পকাল চাকরি করা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের। দীর্ঘ সময় চাকরি করা এসব কর্মচারী নতুন বদলি হয়ে আসা কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের উপর নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। অথচ বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে আসলে বাড়তো অভিজ্ঞতা ও সরকারি চাকরি সমন্ধে বাস্তব ধারণা। একই পদে ৩ বছরের অধিককাল কর্মরত থাকায় তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছেন, অন্যান্য বিষয়ে অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা ছাড়া, একই পদে দীর্ঘদিন যাবত কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও থাকে।
জানা গেছে, উপ-পরিচালক নার্গিস জাহান গাইবান্ধার মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে ২০১৮ সালে যোগদান করেন। যোগদানের প্রায় ৬ বছর গত হচ্ছে। তার স্বাক্ষরিত এক তথ্য প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ হতে ২০২৪সাল পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতিতে ঋন বিতণ করেছেন ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। ২০২১ হতে ২০২৪ অর্থ বছরের দুঃস্থ মহিলা ও শিশু তহবিলে বরাদ্দ ছিল ৮০ হাজার টাকা। ২০২১ হতে ২০২৪ অর্থ বছরে জেলা পর্যায়ে মহিলাদের আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির কম্পিউটার এ্যাপ্লিকেশন ট্রেডে ৬টি ব্যাচে ৩০ জন করে ১৮০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ২০১৮ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতিতে বিতণকৃত ঋন ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকার মধ্যে আদায়ের পরিমাণ জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এ হিসাব বর্তমানে আপডেট নেই। ঋন গ্রহীতাদের পূর্ণ ঠিকানাসহ ফোন নম্বর সেই সাথে দুঃস্থ মহিলা ও শিশু তহবিলে উপকারভোগীদের তালিকা চাওয়া হলে তিনি দেখান তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা। এ ছাড়াও জেলা পর্যায়ে মহিলাদের আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ১৮০ জন প্রশিক্ষণার্থীর তালিকা চাওয়া হলে এটি দিতেও তিনি নারাজ। ২০১৯ হতে ২০২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত কিশোর কিশোরী ক্লাবের গাইবান্ধা সদর উপজেলার বরাদ্দ সংক্রান্ত তথ্য জানা গেলেও বরাদ্দের বাস্তবায়নের খরচের ভাউচারের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। পুরো তথ্য দিতে তার লুকোচুরির কারণে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি বিষয়ে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটন সম্ভব না হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে তিনি প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসতে পারে অনিয়মের খতিয়ান।