গাইবান্ধায় অল্প কয়েকদিনের মধ্যে মাসব্যাপি বাণিজ্য মেলা শুরু হতে যাচ্ছে। এই বাণিজ্য মেলা ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হবে।
জানা গেছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গাইবান্ধা শহরস্থ জেলা প্রশাসকের বাসভবন সংলগ্ন স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে এই বাণিজ্য মেলা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথমে গাইবান্ধা শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে খেলাধুলা বন্ধ রেখে এই মেলার জন্য দোকানপাট গড়ে তোলা হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খেলার মাঠ সংকোচিত করে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা শুরু হচ্ছে, এ রকম একটি পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হলে মেলা কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের বাসভবন সংলগ্ন স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে মেলাটি স্থানান্তর করে। মেলা কে কেন্দ্র করে সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সচেতন মহলে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানা গেছে। সচেতন অভিভাবকরা আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার সময় এমন মেলার আয়োজনকে খুবই উদ্বেগজনক মনে করছেন।
উল্লেখ্য যে, আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারী থেকে সারা দেশব্যাপী এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে এই বাণিজ্য মেলা নিয়ে শহরস্থ ব্যবসায়ীরাও লোকসানের আশংকায় রয়েছে।
এব্যাপারে গাইবান্ধা শহরের সালিমার সুপার মার্কেটের শাহ আলম নামে এক ব্যবসায়ির সাথে কথা বললে তিনি জানান, জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে বাণিজ্য মেলা শুরু হলে সাধারণ ব্যবসায়িরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো, এমনিতেই জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ইরি-বোরো চাষাবাদের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য ভালো হয় না। তার মধ্যে বৈশ্বিক মন্দার কারনে বর্তমানে দেশের ব্যবসাবাণিজ্যর পরিস্থিতিও ভালো যাচ্ছে না।
অপরদিকে জেলা শহরের স্টেশন রোডস্থ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কসমেটিক ব্যবসায়ি জানান, আমাদের এই ছোট্ট জেলায় বাণিজ্য মেলা করা ঠিক হচ্ছে না। এই বাণিজ্য মেলাটি পৌর এলাকার বাইরে করা হলে শহরের সাধারণ ব্যবসায়িরা ব্যবসায়িক ভাবে খুব একটা ক্ষতিগ্রস্থ হতো না। শুধু তাই নয়, এই বাণিজ্য মেলার নামে জেলার বাহির থেকে আগত মেলার দোকানিরা বিভিন্ন ভাবে কাস্টমারদের চটকদার প্রলোভন দেখিয়ে নিম্নমানের পন্যসামগ্রী বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। মেলার এসকল ব্যবসায়ীরা সস্তার নামে মেয়াদোত্তীর্ন, নন-ব্র্যান্ড, জিনিস পত্র বিক্রি করে স্থানীয় বাজার মুল্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ফলে শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা বিশেষ করে তৈরী পোশাক, শাড়ী, থ্রীপিচ, কসমেটিক, জুতা সেন্ডেল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশী।
অন্যদিকে পৌর এলাকার শাপলা মার্কেটের মিলন নামে এক কাপড় ব্যবসায়ি জানান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান ভাড়া, ইলেকট্রিক বিল, ভ্যাট, ট্যাক্স, দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছে। তার মধ্যে বাণিজ্য মেলা শুরু হলে ব্যবসায়ীদের লোকসানের কবলে পড়তে হবে। তবে মেলা যদি করতেই হয় তাহলে শহরের বাহিরে অন্য কোথাও আয়োজন করা যেতে পারে। এতে করে শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারবে।
এব্যাপারে গাইবান্ধা চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসুদার রহমান শাহান জানান, ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও বাণিজ্য মেলা শুরু হতে যাচ্ছে। বিনোদনের কথা চিন্তা করে জেলায় বাণিজ্য মেলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে বাণিজ্য মেলার কারণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের তেমন কোন প্রভাব পড়বে না।