গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মোতাহার আলী (৭০) নামের এক ব্যক্তি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। এরপর মরদেহ দাফনে বাঁধা দেন ভাই-ভাতিজা। তার সঙ্গে টাকা ভাগ নিয়ে দ্বন্দের জেরে দুইদিন পর মরদেহ দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সহায়তায় নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মোতাহার আলীর মরদেহ দাফন করা হয়।এ ঘটনাটি ঘটেছে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামে। মোতাহার আলী গণপূর্তের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারি (হেড ক্লার্ক) ছিলেন।
এরআগে, বুধবার (২১ ফ্রেব্রুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডির কলাবাগান এলাকার ভাড়া বাসায় মারা যান মোতাহার আলী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, মৃত্যুর পর মোতাহার আলীর মরদেহ দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে স্ত্রী মাসুমা বেগম। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছার পর মরদেহ দাফনে আপত্তি জানায় জেঠাত ভাই সেকেন্দার আলী ও ভাতিজা মানিকসহ পরিবারের লোকজন। এসময় তারা মাসুমা বেগমের কাছে মোতাহার আলীর কাছে থাকা নগদসহ জমি বিক্রির ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা কোথায় আছে তা জানতে চায়। এ নিয়ে মাসুমা বেগমের সঙ্গে তাদের দ্বন্দের সৃষ্টি হলে মোতাহার আলীর মরদেহ দাফনে বাঁধা দেয়। এতে তার মরদেহ নিজ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকে।
স্থানীয়রা চেষ্টা করেও তাদের দ্বন্দ্বের নিরসন করতে পারেনি। চাচাতো ভাই-ভাতিজাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে মোতাহার আলী তার নিজ নামের জমি দুই কোটি টাকা বিক্রি করেন। সেই টাকা স্ত্রী মাসুমা বেগমের নামে ব্যাংকে রাখেন মোতাহার আলী। পরে মাসুমা বেগম গোপনে ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা উত্তোলন করেন বলেও তাদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিঃসন্তান মোতাহার আলীর ভাই-ভাতিজার মরদেহ দাফনে আপত্তি জানানোর কারণে মরদেহ বাড়ির উঠানে ছিলে। মূলত মোতাহার আলীর দেনা-পাওনা এবং সম্পদ বিক্রির টাকা নিয়ে তার স্ত্রী মাসুমা বেগমের দ্বন্দে জড়ায় জেঠাত ভাই সেকেন্দার আলীসহ পরিবারের লোকজন। অবশেষে উভয়কে নিয়ে পারিবারিকভাবে অর্থ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে সমঝোতা হয়।
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন ওই ব্যক্তির মরদেহ দাফনের বিষটি নিশ্চিত করেছেন।