ইতোমধ্যে গাইবান্ধা শহরসহ হাট-বাজারে এসেছে লিচু। রসালো এই ফল কিনতে আগ্রহের কমতি নেই ক্রেতাদের। তবে গতবারের চেয়ে এবার দাম দ্বিগুণ। তাই দাম চড়া হওয়ায় রসালো এই ফল কিনতে আসা ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। অনেকেই শুধু দাম শুনে লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন।
দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চলমান তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে লিচুর ফলন কম হওয়ায়কে দায়ী করছেন ব্যবয়াসীরা। তা ছাড়া লিচু ফেটে যাওয়াসহ পোড়া ক্ষত দেখা যাচ্ছে। এতেও বড় প্রভাব পড়েছে লিচুর বাজারে।
গাইবান্ধা শহরসহ হাট-বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে থরে থরে লিচুর পসরা সাজিয়ে বিক্রেতাদের হাঁকডাক। ৫০ ও ১০০টি লিচুর একেকটি আঁটি করা আছে। ১০০টি লিচু (প্রকার ভেদে) ২০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে বেদানা লিচু বিক্রি হচ্ছে শতকরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা যা গতবছর ছিল ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, বোম্বাই ও মাদ্রাজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা যা গতবছর ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে এই জাতের লিচু গুণগতমানের দিক থেকে ভালো না, সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চায়না-থ্রি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা যা গতবছর ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। একটু বড় সাইজের চায়না-থ্রি লিচু শতকরা এক হাজার টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে সব ধরনের লিচু সরবরাহের পরিমাণে খুবই কম।
দামের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে শহরের পুরাতন বাজারের লিচু ব্যবসায়ী সুবহান মিয়া বলেন, বাগানগুলোতে এবার লিচু নেই। বাগানিরা যে স্বল্প পরিমাণ লিচু বাজারে নিয়ে আসছেন, প্রতিযোগিতার মুখে তা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণেই বেশি দামে কিনে সামান্য লাভ রেখে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন।
বাজারের আরেক ব্যবসায়ী শহিদ জানান, এবার বাগানে লিচু নেই। যে পরিমাণ লিচুর ফলন হয়েছে, তা সপ্তাহান্তেই শেষ হয়ে যাবে।
বাজারে লিচু কিনতে আসা লিটন মণ্ডল নামে এক ক্রেতা জানান, বেশি দামে লিচু কিনে পরিবারের মুখে দেয়া অসম্ভব। তাই পরখ করে নয়, দেখেই লিচুর স্বাদ মেটাতে হচ্ছে।
কলেজ শিক্ষার্থী সাওন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি। ভেবেছিলাম ১০০ লিচু নেব। এত বেশি দামে একজন শিক্ষার্থী হয়ে লিচুর জন্য এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়। তাই লিচু ছাড়াই বাড়িতে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, যে দামে লিচু বিক্রি হচ্ছে, তা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। এই দামে শুধু উচ্চবিত্ত ও সরকারি কর্মকর্তারাই লিচু কিনছেন। এ অবস্থায় লিচু কিনতে এসে হতাশ হয়ে ফিরছেন তিনি।