গাইবান্ধায় পৃথক দুই মাদক মামলায় জুয়েল রানা ও দুদু শেখ নামের দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে জুয়েল রানার ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাস এবং দুদু শেখের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে সাত বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার অপর আসামি আবদুল জলিল নামের একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুনতাসির আহমেদ ও সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া পৃথকভাবে এই রায় ঘোষণা করেন। এই রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই তাদেরকে আদালত থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত দুদু শেখ ওরফে নোয়া দুদু (৫০) গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর শক্তিপুর গ্রামের মৃত্যু রহিম উদ্দিন শেখের ছেলে ও জুয়েল রানা (২১) সদর উপজেলার খোর্দ্দমালিবাড়ি চান্দেরঘাট গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে। এছাড়া খালাস পাওয়া ব্যক্তি নাম আব্দুল জলিল (৩০)। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার আরাজি সাহাপুর (মন্ডলপাড়া) গ্রামের টুকু মিয়ার ছেলে।
মামলার বরাত দিয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার সোহেল রানা জানান, ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী রাতে সদর থানার এসআই রবিউল ইসলাম তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কুপতলা ইউনিয়নের চান্দেরঘাট থেকে দাড়িয়াপুর সড়কের একটির চা দোকানের সামন থেকে মাদক বিক্রির সময় জুয়েল রানাকে হাতেনাতে আটক করে। এসময় শরীরে তল্লাসী করে প্যান্টের পকেটে থাকা পলিথিনে মোড়ানো ৩১ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় সদর থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ একমাত্র আসামি জুয়েল রানাকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অপরদিকে, ২০১৮ সালের ২ মে রাত ৮টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর বাজার এলাকা থেকে দুদু শেখ ওরফে নোয়া দুদুকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এসময় তার সঙ্গে থাকা আব্দুল জলিল নামে এক পালিয়ে যায়। পরে আটক দুদু শেখের শরীর তল্লাসী করে ১০০ পিচ ইয়াবা ও ৫০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে দুদু শেখ ও আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফারুক আহম্মেদ প্রিন্স জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত দুইজনকে যাবজ্জীবন ও পলাতক একজনকে খালাস দিয়েছেন।