গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বেলাল হোসেন ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের যোগসাজসী অনিয়মের কারণে ৩ প্রধান শিক্ষক বদলী বঞ্চিত হওয়ায় প্রতিকারের দাবীতে প্রাথমিক শিক্ষা, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় উপ-পরিচালক এর দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চঃ দাঃ) শাহ সুলতান সিরাজী ও কাউয়াবাঁধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চঃ দাঃ) শামস আল ওয়াহেদ মাছুম দূরত্বজনিত কারণে অনলাইন বদলীর জন্য আবেদন করেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলাল হোসেন নেতৃত্বে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে বদলী সুপারীশ ও অগ্রায়ন করতে উৎকোচ দাবী করেন। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে ইউইও এইউইও অন্যান্য শিক্ষকদের নিকট মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের আবেদনে অস্বাভাবিক দূরুত্ব থাকলেও তাদের আবেদনগুলো সুপারীশ ও অগ্রায়ন করে বদলীর সুযোগ করে দেন। আবার আর্থিক লেনদেন সন্তোষজনক না হওয়ায় অনেকের দূরুত্ব জোর পূর্বক এবং অগ্রায়ন না করার ভয়ভীতি দেখিয়ে কমিয়ে দেয়া হয়।
ফরিদা আক্তার, প্রধান শিক্ষক (চঃ দাঃ) জিগাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরুত্ব মাত্র ১ কি.মি.। অথচ তিনি বদলীর আবেদনে ৩০ কি.মি. দেখিয়ে দেন। সেই আবেদনটি অর্থের বিনিময়ে ইউইও এইউইও সুপারীশ ও অগ্রায়ন করে তাকে হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হতে সহযোগিতা করেন।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী, প্রধান শিক্ষক (চঃ দাঃ) হেলেঞ্চা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার স্থায়ী ঠিকানা হতে কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ৪ কি.মি.। অথচ তিনি অনলাইন বদলীর আবেদনে ৩০ কি.মি দেখিয়েছেন। সেই আবেদনটিও অর্থের বিনিময়ে সুপারীশ ও অগ্রায়ন করে তাকে কাঠুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী নিশ্চিত করেন।
শিরিন আক্তার, প্রধান শিক্ষক (চঃ দাঃ) এর কাবিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার স্থায়ী ঠিকানা হতে কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ৬ কি.মি.। অথচ তিনি অনলাইন বদলীর আবেদনে দেখান ৩০ কি.মি. দূরুত্ব। সেই আবেদনটিও উৎকোচের বিনিময়ে ইউইও এইউইও সুপারীশ ও অগ্রায়ন করে তাকে উরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করেন।
এ ছাড়াও চলমান শিক্ষক বদলীর কার্যক্রমে কিছু সহকারী শিক্ষকের স্থায়ী ঠিকানা হতে কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরুত্ব অস্বাভাবিক বেশি থাকলেও অর্থের বিনুময়ে সেই আবেদনগুলোও সুপারীশ ও অগ্রায়ন করেন।
বর্তমানে অনলাইনে চলমান বদলীকৃত ও আবেদনকৃত সকল প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের সার্ভিস বই যাচাই-বাছাই করা হলে দূরুত্বে সীমাহীন দূর্নীতির খতিয়ান বেড়িয়ে আসবে।
তাই এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক শাহ সুলতান সিরাজী ও শামস আল ওয়াহেদ মাছুম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বেলাল হোসেন ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে গত ২১-০৪-২০২৪ ইং তারিখে রংপুর বিভাগের বিভাগীয় উপ-পরিচালক এর দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বেলাল হোসেন জানান, অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বিধি অনুযায়ী বদলী কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হয়েছে।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, অভিযোগ করতেই পারে। নিউজ করলেও আমার কিছুই হবে না। বদলীর বিষয়টি সম্পূর্ণ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিয়ন্ত্রণে।