নদীর একুল ভাঙ্গে ওকুল গড়ে এই তো নদীর খেলা। প্রমত্তা তিস্তার ভাঙ্গনে বিগত কয়েক বছর পূর্বে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫ নং কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নদী গর্ভে বিলীন হলেও জমির অভাবে আজবধি স্থায়ীভাবে গড়ে উঠেনি নতুন ভবন। ফলে ভাড়া ভবনে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজ। হয়রানির শিকার হচ্ছে সেবা গ্রহীতাগণ।
গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ২৭/২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়ন। দাপ্তরিক ওয়েবসাইট এর উইকিপিডিয়া’র তথ্যমতে এর মোট আয়তন ১৫৫.০৪ বর্গকিমি (৫৯.৮৬ বর্গমাইল), ১৯৯১ সালের তথ্যানুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৯,৪৪৪ জন। ইউনিয়নটি তিস্তা নদী বেষ্টিত হওয়ায় কছিম বাজার ঘাটের প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিল পরিষদ ভবনের অবস্থান। বিগত কয়েক বছর পূর্বে ভাঙ্গনের কবলে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় এই ভবন। এরপর থেকে কছিম বাজারে অস্থায়ীভাবে ভাড়া ভবনে চলে আসে এর কার্যক্রম।
এসব ভবনে স্বল্প পরিসরের জায়গায় বসে ইউপি চেয়ারম্যান, সচিবসহ ইউপি সদস্যগণ সেবা প্রদান করলেও কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে সেবা গ্রহীতাগণ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গ্রাম পুলিশ বলেন, এখানে নেই মালপত্র রাখার জায়গা। ভিজিডি কিংবা ভিজিএফ এর খাদ্য শস্য অনেক সময় অন্যের বাড়িতে রাখতে হয়। জায়গার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম আদালত পরিচালনাও বন্ধ রয়েছে। চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যদেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে সালিশ বৈঠক করতে হয়।
কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনজু মিয়া বলেন, কার্যালয় ভাড়া বাবদ সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। পকেটের টাকা দিয়ে ভবনের ভাড়া দিতে হচ্ছে। বর্তমানে পরিষদ ভবনের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে মাটি ভরাট করা হয়েছে। এটি পরিষদের নামে দানপত্র করে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এ ইউনিয়নের ভাটিকাপাসিয়া গ্রামের মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, স্থান সংকুলান না হওয়ায় ডিজিটাল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মানুষ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেবা নিতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে জন্মনিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদের ফটোকপি করতে বাইরের ফটোকপি’র দোকানে যেতে হচ্ছে। অথচ এ কাজগুলো পরিষদে হবার কথা।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম জানান, পরিষদের জন্য জায়গা নির্ধারণে ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভবন নির্মাণের বিষয়টি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখাকে অবহিত করা হয়েছে।