গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় জমির দানপত্র দলিল সম্পাদন নিয়ে সাব-রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়-বস্তু নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। উঠেছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য।
উপজেলার নশিরার পাড়া গ্রামের জনৈক নবির হোসেনের অভিযোগ, নবজ আলী ওরফে নবর আলী পাগলা (৬৫) একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। তার ভাই-বোন না থাকায় পিতা-মাতার মৃত্যুর পর নবজ আলীর জমিজমা সহ সকল সম্পতি স্বজনরা ভোগদখল করে আসে। এমতাবস্থায় নবজ আলীর চাচাতো ভাই ওমর আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান গত ২২ জানুয়ারী ১ একর ৩৬ শতক জমি একা ভোগ করার উদ্যেশ্যে গোপনে নবজ আলীর টিপ জাল করে সাব-রেজিস্টার অফিসে নিজের নামে দানপত্র দলিল সম্পাদন করে নেন।
নবির হোসেনের এমন অভিযোগের বিষয়-বস্তু, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন, যুক্তি-তর্ক নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। উঠেছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। অনেকেই বলছেন, দান হতে হবে স্বতঃপ্রণোদিত, কারও কথার চাপে পড়ে শর্ত মেনে কিংবা প্ররোচনায় পড়ে সম্পত্তি লিখে দেয়ার নাম দান নয়। সম্পত্তির যাবতীয় মালিকানা বা স্বত্ব অন্যের হাতে তুলে দেয়ার নামই দান। জমি দাতা নবজ আলী ওরফে নবর আলী যদি মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি হবেন তবে জমি দানের ঘোষনা প্রদান করলেন কি ভাবে? নবজ আলী ওরফে নবর আলী মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি হলে নবির হোসেনের উচিৎ ছিল সম্পত্তি রক্ষায় পূর্বেই সাব-রেজিস্টারের দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে রাখা। যেহেতু শুধু মাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া নাগরিকত্ব কিংবা কোন প্রকার প্রত্যায়ন পত্র অন্য কেউ পেতে পারেন না একারণে নবজ আলী ওরফে নবর আলী যদি মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি হন তবে নামের সঠিকতার প্রত্যায়ন পেলেন কি করে বিষয়টি প্রশ্ন বিদ্ধ। নবজ আলী ওরফে নবর আলী যদি ছোট বেলা থেকে স্পট করে কথা বলতে না পারেন হতে পারে সে বাক প্রতিবন্ধী।
নিয়ম অনুযায়ী দলিল লেখক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর সাব-রেজিস্টার দাতার সম্পাদনের স্বীকারোক্তি নিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য গ্রহণ করে। যদি নবজ আলী ওরফে নবর আলী মানুসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি হন তবে সাব-রেজিস্টার দলিল সম্পাদনের সময় স্বীকারোক্তি দিলেন কি করে? এখানে যোগসাজশ করে দলিল সম্পাদনের স্বার্থকতাই বা কি?
সচেতন মহলের মন্তব্য, নবজ আলী ওরফে নবর আলী যদি সূবর্ণ কার্ডধারী হয়ে থাকেন তবে সে কোন ধরনের প্রতিবন্ধী বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা উচিৎ।
সাব-রেজিষ্টার মিরাজ মোর্শেদ মিলন এর সাথে কথা হলে জানা যায়, জমি দাতা নবজ আলীর মানুসিক প্রতিবন্ধীর কার্ড দেখানো হয়নি। দলিল সম্পাদনের সময় তাকে দেখে পাগল মনে হয়নি। দেখে শুনেই দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।