গাইবান্ধায় হঠাৎ করে জন্ম নিয়েছেন নব্য কোটিপতি। আলাউদ্দিনের চেরাগের মতো রাতারাতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার মালিক। দৃশ্যমান কোন আয়ের উৎস না থাকলেও কোটিপতি বনে যাওয়া কে এই খোকন মিয়া? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের কাজলঢোপ গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে খোকন মিয়া। প্রায় ১৫/২০ বছরে এ ব্যক্তির হঠাৎ কোটিপতি হবার গল্পটা এখন সবার জানা থাকলেও সবাই নিরব নিশ্চুপ। তার বাবা পেশায় দিন মজুর ছিলেন। মা প্রকাশযোগ্য তেমন কোনো কর্মে লিপ্ত ছিলেন না। খোকন মিয়ার তেমন লেখাপড়া নেই। বাবার দুই শতকের বাস্তু ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। বাবা দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পুত্র খোকন মিয়ার ছোট থেকেই ছিল জুয়ার প্রতি তীব্র আকর্ষণ। সংসারের এমন অবস্থায় জীবন যখন থমকে যায় তখন এক সময়ে বাবা মোহাম্মদ আলী স্বপরিবারে পাড়ি জমান ঢাকা শহরে। পেশা হিসেবে বেছে নেন রিকশা চালনা। সেখানে বাবার সাথে অবস্থান কালে ভাগ্য খুলে যায় খোকন মিয়ার। মাত্র ১৫/২০ বছরের মধ্যে কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। গত বছরের শেষ দিকে গ্রামে ফিরে আসেন। এরপর এলাকার এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। বাবার পৈত্রিক ভিটা বাদে সাদুল্লাপুর-গাইবান্ধা সড়কের পাশে কদমেরতল নামক ছোট্ট একটি বাজারের পাশে সড়ক ঘেষে উচ্চমূল্যে বাড়ি করার মত জায়গা কেনেন।
এজায়গাতেই লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আলিসানবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। তার এ অর্থের উৎসের নেপথ্য রহস্য ধাপাচাপা রাখতে টাকার বিনিময়ে গোপন সখ্যতা গড়ে তোলেন কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে। শুধু প্রভাবশালী নেতাই নয় সখ্যতা রয়েছে থানা পুলিশের এক কর্মকর্তার সাথেও। তারা অবৈধ কাজে পেশি শক্তির জোগান দেয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এই খোকন। আর এ সুযোগে অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো সম্রাট খোকন গোপনে অল্প টাকায় বেশী টাকার লোভ দেখিয়ে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসে নামিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি রয়েছে মদ্য পানের নেশাও। অনেকেই তার খপ্পরে পরে নি:স্ব হলেও তার ভয়ে সবাই যেন নিশ্চুপ। মুখ খুলছে না এলাকার কেউ।
কথায় আছে, চোরের মন পুলিশ পুলিশ। ক্যাসিনো সম্রাট খোকনের এহেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে ভয়ে নিরব নিস্তব্দ থাকেন তার আলিসানবাড়ির লোকজন। খোকন কোথায়? কিংবা ফোন নম্বর চাইলেও মেলেনা তার সঠিক উত্তর। এমনকি কদমেরতল বাজারে গিয়ে খোকনের নাম জিজ্ঞাসা করলেই সবাই যেন আঁতকে উঠেন। একে অপরের মধ্যে শুরু হয়ে যায় কানাকানি।
সবার মুখে একই প্রশ্ন ব্যাপারটা কি? বিষয়টি জানতে অনেক চেষ্টার পর সাংবাদিক টিমের সাথে এক সময়ে দেখা হয় এই ক্যাসিনো সম্রাট খোকনের সাথে।
খোকন জানান, ১৫/২০ বছর স্বপরিবারে ঢাকায় থেকে কিছু টাকা জমিয়ে এই বাড়ি করেছি। আগের মত আর জুয়ার নেশা নেই। এখনও খেলি তবে আগের চেয়ে অনেক কম। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে, সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদারকে ফোন দেয়া হলে তিনি জানান, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তথ্য পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।