সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল এর স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার তরফ মহদী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম চলছে গোলে মালে যত দিন। পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকলেও নেই কাঙ্খিত শিক্ষার্থী। এ অবস্থা আরও কত দিন? প্রশ্ন এলাকার শিক্ষিত সচেতন মহলের।
জানা গেছে, প্রাচীন ধারার শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা অন্যতম। সরকার ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। প্রণয়নকৃত জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকীকরন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। সরকারের এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে এ উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের তরফ মহদী দাখিল মাদ্রাসায়। ১৯৯০ইং সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে এর শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ঠিক যেন গোলেমালে যতদিন। যেন দেখার কেউ নেই।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর আনুমানিক ১টায় মাদ্রাসাটিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শিক্ষক/কর্মচারী ১৭ জনের মধ্যে সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল অনুপস্থিত। তিনি ২ দিন ধরে আসেন না। আজ অফিসের কাজে উপজেলায় গেছেন। অফিসের কাজে গেলেও মুভম্যান খাতায় কিছু লিখে যাননি। এ মাদ্রাসাটিতে মোট কত জন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছে সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছেন না। শিক্ষকরা জানান, দুই দিন ধরে হাজিরা খাতা ইউএনও অফিসে জমা রয়েছে। ফলে হাজিরাও হচ্ছে না। শ্রেণি কক্ষগুলো পরিদর্শনে দেখা যায়, দশম শ্রেণিতে ৩ জন, নবম শ্রেণিতে ৪জন, অষ্টম শ্রেণিতে ৩জন, সপ্তম শ্রেণিতে ১১ জন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৯ জন,পঞ্চম শ্রেণিতে ৩ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী নেই। তৃতীয় শ্রেণিতে মাত্র ১জন উপস্থিত। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দূপুর ১২ টায় ছুটি হয়েছে। জানা যায়, মাদ্রাসাটিতে শিক্ষক কর্মচারীর কোন কমতি না থাকলেও শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার খুবই কম।
সব চেয়ে লাজুক পরিস্থিতি এবতেদায়ী শাখায়। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী নিয়ে এ শাখার ৪ শিক্ষক সময় কাটান আরাম আয়েসে। মাদ্রাসাটি জনঘন বসতি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হলেও কাঙ্খিত শিক্ষার্থী না থাকায় মুখ থুবরে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। এমনকি মাদ্রাসাটিতে বিশাল মাঠ থাকলেও যে পরিমান শিক্ষার্থী রয়েছে তা দিয়েও নিয়মিত করা হয় না এ্যাসেম্বিলি। শিক্ষার্থীরা জাতীয় সঙ্গীত জানে কি না এনিয়েও রয়েছে বিস্তর সন্দেহ। সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল এর স্বেচ্ছাচারিতা ও অবহেলার কারণে মাদ্রাসাটি পরিচালনায় সরকারি অর্থ ব্যয় হলেও মিলছেনা এর কাঙ্খিত সফলতা। এ জন্য মাদ্রাসা সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল এর স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
শুধু তাই নয়, মাদ্রাসা পরিচালনার ক্ষেত্রেও সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল এর বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল নিজের ভীত শক্ত রাখতে ইতোপূর্বে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে নিজের পছন্দের লোকজন দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করে নিয়োগ বানিজ্য করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে এখনও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষার্থী অভিভাবকগণসহ এলাকার সচেন মহলে।
সহসুপার ইসমাইল হোসেন মাদ্রাসাটির এমন পরিস্থির বিষয়ে সত্যতা শিকার করে জানান, মাদ্রাসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি হতেই পারে। এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সুপার মুক্তার হোসেন মন্ডল এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন মর্মে ফোন বন্ধ করে রাখেন।
সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হাবীব এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন মর্মে আশ্বস্ত করেন।